দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে রেলওয়ের জায়গা উচ্ছেদের ঘোষণার প্রতিবাদে ও পুনর্বাসনের দাবিতে সমাবেশ করে এলাকাবাসী।
শনিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে চৌধূরীবাড়ির ভূইয়া পাড়া এলাকায় ৫ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসনের দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উচ্ছে¡দ প্রতিরোধ কমিটি ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ বলেন, করোনা পরিস্থিতির মত দুঃসময়ে এখানে সড়ক বড় করতে গিয়ে আশেপাশের লোকজনদের উচ্ছে¡দ করার নির্দেশ দিয়েছে। এটা হবেনা।
এই জায়গা একসময় রেলওয়েল জন্য জনগণের জায়গা জমি নিলাম করে নেয়া হল। তাদের নাতিপুতি যারা আছে তারাই আশেপাশে বসবাস করে। সরকারের কাছে একটা নিবেদন করে বলতে চাই, রেললাইনের প্রয়োজনে জায়গা নেন। আইন বলে রেলওয়ে যখন নেই তখন জায়গা যাদের ছিল তাদের ফিরিয়ে দেয়া হোক। এটা না করে সড়ক করা হয়েছে। এই সড়কের যদি না হয় তাহলে বড় সড়ক করতে চাইলে আগে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাকে ঘর বাড়ির জায়গা দেয়া সরকারের একটা দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব যদি সরকার পালন না করে। তাহলে এই দেশে আইন আছে আদালত আছে সেখানে আবেদন করতে পারি। একটা লোক যদি একটা জায়গায় ৬০ বছর বসবাস করে সেখানে তার অধিকার দাঁড়ায়। এটা আইন সম্মত এদেশের আইনে আছে। সেক্ষেত্রে তাদের অসহায়ের কথা বিবেচনা করে পুনর্বাসন করা।
তাদেরকে পুনর্বাসনের জন্য যথাযথ সময় দেয়। প্রয়োজনে আইনী লড়াইয়ে যেতে হতে পারে এমনকি অনিবার্য্য কারণে আন্দোলনেও যেতে হতে পারে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ৮ মাস আগে করোনা পরিস্থিতির আগে ফেব্রুয়ারীতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছিলাম। সেই প্রতিবাদ সভার আগে অনেক হুমকি ধামকি দিয়েছিল। সেসব উপেক্ষা করে আমরা প্রতিবাদ করে গিয়েছি।
গত ১৫ তারিখ রেকর্ডিংকৃত মাইকিংয়ের মাধ্যমে আদমজি ইপিজেট থেকে চাষাঢ়া পর্যন্ত রেললাইনের দুইপাশে ঘর বাড়ি, দোকান-পাঠ সহ সকল প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছায় সরিয়ে নেয়া না হলে আগামী ৬ ডিসেম্বর উচ্ছেদ করে মালামাল নিলামে বিক্রি করার মাইকিং হয়েছে। তবে কে কাকে দিয়ে এই মাইকিং করানো হয়েছে তা কেউ বলতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, সারা দেশ যখন উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে তখন সংসদ সদস্য একটি প্রকল্প নিয়েছেন এখান দিয়ে একটি সড়ক হবে। আমি আমার সংসদ সদস্যকে অভিনন্দন জানাই। কারণ তিনি একজন জনগণের নেতা।
ডিএনডি বাসী যখন ময়লার পানিতে ভাসছিল তখন আমার সংসদ সদস্য দুই দফায় ১২শ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে কাজ চলছে। আমি দীর্ঘদিন যাবত তার সাথে রাজনীতির সাথে জড়িত। আজকে মাননীয় সংসদ সদস্য আমি জানিনা এই প্রচার কোথা থেকে হয়েছে এবং কে করেছে। আজকে তারা যে উচ্ছে¡দের কথা বলে এটা করতে হলে তিন মাস সময় দিতে হয়। সেই উচ্ছে¡দের বিরুদ্ধে আমাদের কথা বলতে হচ্ছে।
আজকে এখানে শকুনের চোখ পড়েছে। তবে সরকারের উন্নয়নের আমরা কখনোই বাধা হবনা। একটি সড়ক এখানে হয়েছে আরেকটি সড়ক কিংবা সড়ক বড় করা হলে সেটি কতফুট হবে আমরা জানতে চাই, ততটুকু আমরা দিতে প্রস্তুত। তাদেরকে রেলওয়ের অন্য জায়গায় পুনর্বাসন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে চানমারী বস্তি উচ্ছে¡দের ব্যাপারে বলেছিলেন পুনর্বাসন ছাড়া আমার চানমারী বস্তিবাসীকে উচ্ছে¡দ করা চলবেনা। আমি সেই নেতার সৈনিক।
আপনি যেমন সেদিন আপনার এলাকাবাসীকে রক্ষার জন্য নেমেছিলেন আমিও ঠিক রেললাইনের দুপাশের মা বোনদের রক্ষা করার জন্য নেমেছি। নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের যুগ্ন সম্পাদক সাগর প্রধান বলেন, যুগে যুগে বিএনপি আওয়ামীলীগ অনেক সময় রাস্তা সড়কের জন্য অনেক ফেক্টরী বন্ধ করে দেয় জায়গা উচ্ছে¡দ করে। কিন্তু আমরা রাজনৈতিক কারণে হয়তো অনেক সময় তাদের পাশে দাঁড়াতে পরিনা। কিন্তু মন্টু ঘোষের মত লোক সব সময় মানুষের পাশে দাঁড়ায়, মানুষের জন্য আন্দোলন করে, মানুষের কথা বলে।
প্রয়োজনে ড. কামালকে এর সাথে সংযুক্ত করা হবে। মাননীয় সংসদ সদস্য এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পের বিরোধীতা করিনা। তবে যারা দুই পরিবার তিন পরিবার ধরে এখানে বসবাস করছে তাদের উচ্ছে¡দ করতে ১৫ দিনের নোটিশ দেন এটা একটা ফাইজলামি ছাড়া কিছুই হতে পারেনা। ভিন্ন দেশের রোহিঙ্গাদের এদেশে আশ্রয় দেয়া হয় অথচ নিজ দেশের মানুষদের পুনর্বাসন করা হয়না। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন উচ্ছে¡দ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব মো. আমিনুল হক প্রধান, মো. আলী হোসেন মেম্বার, আদর্শ বাজার কমিটির সভাপতি মো. আয়নাল হক, সহ সভাপতি বাচ্চু মিয়া, ব্যবসায়ী মো. রিপন মিয়া, মো. মাসুম প্রধান, মো. তোবারক হোসেন সহ প্রমুখ।