দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: চলতি মাসের ৯ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কমিটির নির্বাচন। আর এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীরা ভোটের লড়াইয়ে জয়ের জন্য শুরু করেছেন নানা কৌশল। তবে সাধারণ সমর্থকরা চান ফোরাম নেতৃত্বের প্রসার ঘটুক এবং আসুক নতুন নেতৃত্ব।
সে ক্ষেত্রে সমালোচনার উর্ধ্বে স্বচ্ছ ও ক্লিন ইমেজধারী আইনজীবী নেতাদের চান তাদের প্রতিনিধি হিসেবে। আর এর কারন হিসেবে তারা বলছেন দীর্ঘদিন ধরে বার নির্বাচনে বিএনপি বড় কোন বিজয়ের দেখা পাচ্ছে না। আর এজন্য ফোরাম নেতৃত্বকেই দায়ী করছেন তারা। তাছাড়া ফোরাম রাজনীতি সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্যই হল দেশের সবগুলি বারে বিএনপির অবস্থান পাকাপোক্ত করা।
অথচ বিগত কমিটির দায়িত্বে থাকা কিছু ক্ষমতা লোভী আইনজীবী ফোরাম নেতার স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের দরুন দীর্ঘদিন ধরে বার নির্বাচনে সফলতার মুখ দেখছে না বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। যার ফলে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বের করে আনতে চায় তারা। এবার পদ পদবির জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দরা প্রকাশ্যে বিভক্তিকে বাস্তবায়নের জন্য ৫টি পদে নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি প্যানেলে মোট ১১ জন প্রার্থী অংশগ্রহন করবেন।
তবে দুটি প্যানেলে ৫ জন করে আর একটি প্যানেলে শুধু সাধারণ সম্পাদক পদে থাকছে ১ জন। যার মধ্যে সভাপতি পদে লড়াই করতে প্রার্থী হয়েছেন বিগত কমিটির সভাপতি ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখা এ্যাড. সরকার হুমায়ূন কবির। যিনি এ্যাড. সাখাওয়াত বলয়ের কর্মী হিসেবেই আদালতপাড়ায় পরিচিত। তবে হুমায়ূনকে সভাপতি হিসেবে প্রার্থী করা হলেও সাধারণ সমর্থকদের ভাষ্যমতে সাখাওয়াতের মূল টার্গেট হল সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এ্যাড. আবুল কালাম জাকির। কারণ সাখাওয়াত নিজেও জানেন আদালতপাড়ায় হুমায়ূনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ। কারন হুমায়ূনের রাজনীতি ক্যারিয়ার ব্যর্থতায় পর্যবসিত।
সূত্র বলছে, ২০০১ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে এ্যাড. সরকার হুমায়ূন কবিরকে সভাপতি ও এ্যাড. আজাদ বিশ্বাসকে সাধারন সম্পাদক করে প্রার্থী দিয়েছিল বিএনপি প্যানেল। আর সেই সময় সভাপতি পদের এ সরকার হুমায়ুন কবির মাত্র দুই লক্ষ টাকার বিনিময়ে আওয়ামীলীগ নেতা ও বিরোধী প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এ্যাড. সুরুজ আলীর নিকট নমিনেশন পেপার তুলে দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যান বিধায় তিনি নব প্রজন্মের আইনজীবীদের নিকট দুইলাইক্কা হুমায়ুন নামেও বেশ পরিচিত। আর নিয়ে সেসময় তিনি উত্তম-মাধ্যমের শিকারও হয়েছিলেন বলে দাবি করেন এ্যাড. আব্দুল হামিদ ভাষানী। যা নিয়ে স্থানীয় মিডিয়াতে বেশ আলোচনার হয়েছে বহুবার।
এছাড়াও সর্বশেষ ২০০৮ সালে আইনজীবী ফোরাম নির্বাচনে এ্যাড. আব্দুল বাড়ী ভুঁইয়া সাথে সভাপতি পদে নির্বাচনে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হন তিনি। তবে আইনজীবী নেতাদের মধ্যস্ততায় তখন অ্যাড. বারী ভুইয়া তাকে সভাপতি পদ ছড়ে দেন। এছাড়াও সরকার হুমায়ুন কবির পরপর দুই বার ফোরামের দায়িত্ব পালন করলেও তার মেয়াদে ফোরামের কোনো সাংগঠনিক ভিত্তি তৈরী হয়নি বলেই প্রতিবেদকের কাছে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নির্বাচনগুলোতে তার ভুমিকা নিয়েও অনেকের ভিন্ন মত রয়েছে। সরকার হুমায়ুন কবির ফোরামের সভাপতি থাকাকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী ফোরাম নির্বাচনে বারবারই ভরাডুবির কারন হিসাবে তার অদায়িত্বশীল মনোভাবকে দায়ী করেন অনেকেই।
এদিকে, সাধারন সম্পাদক প্রার্থী এ্যাড. জাকিরও আছেন বেকায়দায়।যিনি আদালতপাড়ায় নির্বাচন ইস্যুতেই রাজনীতি করে থাকেন। বিগত দিনে নেই যার দলের জন্য কোন প্রকার অবদান। আদালতপাড়া বাহিরে যাকে কোন দেখা যায়নি দলের কোন একটি কর্মসূচীর ব্যানার ধরতে। নির্বাচন আসলেই সরব হয়ে ওঠেন পদ পদবীর লোভে। তাছাড়া রুপগঞ্জে তিনি আওয়ায়ীলীগ পরিবারের সন্তান হিসেবেই বেশ পরিচিত। তার পরিবারের কেউ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।ফলে সাধারন সমর্থকের মধ্যে জাকিরের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। যার ফলে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বেশ বেকায়দায় আছেন সাখাওয়াত ড্যামি প্রার্থী হুমায়ূন ও জাকিরকে নিয়ে।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবি ফোরামের নির্বাচনে ৩ টি প্যানেলের প্রার্থীর মধ্যে এদিকে, প্রকাশ্যে নিজেদের মধ্যে পদ পদবি আকড়ে রাখতেই প্রতিদ্বন্দিতা করা নির্বাচনে ৫টি পদে ভোটের লড়াই হবে। যেখানে ৩টি প্যানেলের মধ্যে একটিতে সভাপতি এ্যাড. আবদুল হামিদ ভাষানী, সাধারণ সম্পাদক পদে এড. আজিজ আল মামুন।
অপরটিতে সভাপতি এ্যাড. সরকার হুমায়ুন কবীর, সাধারণ সম্পাদক পদে এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ জাকির। এছাড়াও একটি প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক পদে একাই দুই প্যানেলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন এ্যাড. সুমন মিয়া।