দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার মহজমপুর ইউনিয়নের মইষাটেক গ্রামে অবস্থিত বি,আর স্পিনিং মিলের মালী ইলিয়াছ শেখের ছেলে ২য় শ্রেণীর স্কুল ছাত্র জিসান আরাফ (৭) এর হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন কলে নিহত শিশু জিসান আরাফের পরিবার ও বি,আর স্পিনিং মিলের শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাগণ। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত হয় এ মানব বন্ধন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নিহত স্কুল ছাত্র জিসান আরাফ এর বাবা, ইলিয়াছ শেখ, মা সুবর্ণা আক্তার, বড় ভাই আশরাফুল, চাচা দিদার, আজগর সহ বি,আর স্পিনিং মিলের শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা বৃন্দ। এ সময় বক্তরা বলেন, নিহত স্কুল ছাত্র জিসান আরাফ পিতা ইলিয়াছ শেখ অবস্থিত সোনারগাঁও থানার মহজমপুর ইউনিয়নের মইষাটেক গ্রামের বি,আর স্পিনিং মিলের মালী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
চলতি মাসের গত ৩ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় স্কুল ছাত্র জিসান আরাফ। পরববর্তীতে নিখোঁজের বিষয়ে ইলিয়াছ শেখ থানায় একটি সাধারন ডায়রী দায়ের করলে গত ১০ ডিসেম্বর বেলা ২টার দিকে পুলিশ স্থানীয় এলাকার রাশিদা বেগম (৪০) নামের এক মহিলার বসত ঘর থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় স্কুল ছাত্র জিসান আরাফের এর লাশ উদ্ধার করে। মামলার প্রধান আসামী রাশিদা বেগমকে আটক করলেও পরে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।
এ হত্যান্ডের সুষ্ঠ বিচার এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ ও সাহায্য কামনা করেছেন তারা। উল্লেখ যে,নিহত জিসান উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের মরিচটেক এলাকায় অবস্থিত বি.আর স্পিনিং মিলের মালি ইলিয়াস শেখের ছেলে। ইলিয়াস শেখ সন্তান জিসান ও স্ত্রী খালেদা আক্তারকে নিয়ে কারখানার ভেতরে একটি পরিত্যক্ত ঘরে বসবাস করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ইলিয়াস শেখের স্ত্রী খালেদা আক্তার বি.আর স্পিনিং মিলে দীর্ঘদিন যাবত বাবুর্চির কাজ করে আসছিলেন। গত ১ ডিসেম্বর দুপুরে শিশু জিসান কারখানা এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়।
এ ঘটনার পরদিন নিখোঁজ জিসানের পিতা ইলিয়াস শেখ বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ জিসানের কোনো সন্ধান করতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার সকালে বি.আর স্পিনিং মিলের রান্নাঘর থেকে শিশু জিসানের বস্তাবন্দি অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টিএম মোশাররফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অঞ্চল) মো. খোরশেদ আলম, সোনারগাঁ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম ও তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আহসান উল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বি.আর স্পিনিং মিলের একাধিক শ্রমিক জানান, বি.আর স্পিনিং মিলের বাবুর্চি ও শিশুটির মা খালেদা আক্তার কারখানার রান্নাঘরে দুর্গন্ধ পেয়ে মিল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাটি জানানোর পরই বাবুর্চি খালেদা আক্তার তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান।
নিহত জিসানের বাবা ইলিয়াস শেখ জানান, বাড়ির পাশ্ববর্তী একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান বি.আর স্পিনিংয়ে তিনি মালি হিসেবে কাজ করেন। তার কোনো শত্রু নেই। কীভাবে কী হল তা তিনি কিছুই জানেন না। তবে তিনি তার ছেলের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।