দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে উদীয়মান তরুন ও নতুনদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হচ্ছেন ভোটাররা। নাসিকের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরির্বতনের আবাস বইতে শুরু করেছে। আর ভোটাররাও এবার ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে অনেকটাই নড়ে চড়ে বসেছেন।
আর এর প্রধান কারন হিসেবে উঠে আসছে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা না রাখা, মাদক ব্যবসায়ীদের মদদ দেয়া বা জন প্রতিনিধি হয়ে নিজে এই ব্যবসার সাথে জড়িত থাকা, নারী ঘটিত ঘটনায় নিজেকে আশক্ত করা, মাদক সেবন করা।
এবারের নাসিকের একাধিক ওয়ার্ডে নির্বাচনের পুর্বেই ভোটারদের মধ্যে পরির্বনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এ সকল ওয়ার্ড গুলোর মধ্যে ২৩নং ওয়ার্ড একটি। যেখানে বর্তমান কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধানকে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক ব্যবসা করার অভিযোগ।
শুধু তাই নয় কাউন্সিলর থাকা কালিন মাদক সহ নিজেই প্রশাসনের হাতে আটক হয়েছেন। এছাড়াও তার নিয়ন্ত্রনে এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা। তার অর্থ লোভের কারনে এলাকার যুব সমাজ দিন দিন মাদকাশক্ত হয়ে পরছে। এতে দিন দিন ভবিষ্যত্ব প্রজœমকে ধ্বংসের ধারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ রয়েছে। এবার ভোটাররা এলাকার যুব সমাজ ও নিজেদের পরিবারের সন্তানদের মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা করার জন্য সাবেক সাংসদ পুত্র আবুল কাউছার আশাকে নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে অংশ গ্রহন করিয়েছেন। এখন দেখার বিষয় শেষ বেলায় কি হয় ভোটারদের রায়।
অন্যদিকে, নাসিক ৮নং ওয়ার্ড বর্তমান কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা ইতিমধ্যে নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ায় তার প্রতি সাধারণ ভোটাররা নাখোশ। চাঁদাবাজী, মাদক ব্যবসা, ভূমি দস্যুতা, ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রনসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। যা স্থানীয় মিডিয়াতে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে একাধিকবার। সর্বশেষ গত ১৯ জুলাই কাউন্সিলর রুহুলের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করছেন এনায়েতনগর পশ্চিম পাড়া বায়তুল আমান জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লী ও সাধারণ সম্পাদক মো. এমরান হোসেন। ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জগলুল হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন। মামলার ঠিক দুইদিন আগে ১৭ জুলাই কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লার সহযোগী মমিনুল আলম পুষণ ওরফে বাবা পুষণকে (৩৩) মাদক মামলায় গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এছাড়াও প্রায় ৬/৭ মাস আগে কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা’র আপন বড় ভাই খোকন মোল্লা এক ভিডিও বার্তায় দাবী করেছিলেন, কাউন্সিলর রুহুল আমিন মাদক ব্যবসা করেন। ৮নং ওয়ার্ডে বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কাউন্সিলর রুহুলের পক্ষে খোকন মোল্লা হিসাব রাখতেন এবং মাদক ব্যবসার টাকা রুহুলের হাতে পৌঁছে দিতেন। খোকন মোল্লার সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল।
এছাড়াও নাসিক ১৩নং ওয়ার্ডের বর্তমান আলোচিত কাউন্সিলর খোরশেদ যিনি করোনা বীর হিসেবে সকলের কাছ থেকে বেশ প্রশংসা কুড়িয়ে ছিলেন। বিগত নির্বাচনে যিনি মসজিদে দাড়িয়ে ওয়ার্ডবাসীকে দিয়ে ছিলেন নানা প্রতিশ্রুতি। ঘোষনা দিয়ে ছিলেন ১৩ নং ওয়ার্ডবাসীর জন্য যে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি। তাতে করে এই ওয়ার্ড থেকে জলাবদ্ধতা মুক্তি পাবে। তার সেই ঘোষনার বাস্তবতার চিত্র আজও ওয়ার্ডবাসী দেখেননি। অথচ ওয়ার্ডবাসীকে দেয়া কথা না রেখে নারী নিয়ে ছিলেন তার আনন্দের স্বর্গে। এছাড়াও খোরশেদ তিনবার নির্বাচিত হলেও তার ওয়ার্ডের মাদক নিয়ন্ত্রন না করে উল্টো নিজেই মাদক সেবনে আশক্ত হয়ে পরেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে তার মাদক সেবনের বিষয় স্থানীয় মিডিয়াতে এ্যাড. আনোয়ার প্রধানের বরাদ দিযে সংবাদ প্রকাশিত হয়ে ছিলো। তাই তাকে নিয়ে নতুন করে ভোটাররা ভাবতে শুরু করেছেন সময়ের প্রয়োজনে।
এদিকে, নাসিকের অনেক ওয়ার্ডেই মাদকের সয়লাব হওয়াতে ভবিষ্যত্ব প্রজন্মকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন অভিবাবক ও ভোটাররা। তাই এবারের নির্বাচনে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে অনেকটাই নড়ে চড়ে বসেছেন। সেই সাথে পরির্বতনের জন্য সময়ের অপেক্ষা করছেন।