দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: সদ্য ঘোষিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিক দলের আহবায়ক কমিটি নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে। তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো মাত্র দুই সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি আনতে গুনতে হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। আর সেই কারনেই লাভ লসের হিসেব মিলাতেই পদ পদবির বানিজ্যে বেশ উঠে পরে লেগেছেন সদস্য সচিব ফারুক হোসেন। এছাড়াও কমিটি বানিজ্যের বাইরে তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে শ্রমিক নেতাদের নানা অভিযোগের পাহাড়।
এ বিষয় শ্রমিক দলের কয়েকজন নেতা ও কর্মী বলেন, যোগ্যদের পাশকাটিয়ে অযোগ্য ও ঘরকুণে নেতাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবারের কমিটিতে। যারা বিগত ৫ বছরে সাংগঠনিক ও দলীয় কর্মসূচি গুলোতে ছিলো রাজপথে। এছাড়াও বিগত ৭ বছর তারা মহানগর শ্রমিক দলের দায়িত্ব পালন করলেও সেই কমিটিকে পুর্নাঙ্গ রুপ দিতে হয়েছে ব্যর্থ।
এখন তারা মহানগর শ্রমিক দলের নেতাদের পদ পদবির জন্য টাকা দাবি করছে আর আমাদের বলে যাচ্ছে কমিটি আনতে ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে, আর খরচ লাগবে। যেটা শ্রমিক দলের নেতাদের কাছ থেকে নিতে হবে।
তারা আরও বলেন, বর্তমান সদস্য সচিব যিনি এক কালিন মোটা অংকের টাকা ও মাসিক ৬ হাজার মাসোয়ারার বিনিময় “নারায়ণগঞ্জ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি: নং ২৫৮৪” ক্ষমতাশীন দলের নেতাদের কাছে হস্তান্তর করে দেয় বর্তমান মহানগর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন। এছাড়াও বাসষ্ট্যান্ডে পরিচালিত জোয়ার আসর থেকে তিনি প্রতিদিন নিচ্ছেন ৩শ টাকা।
তার দেখাদেখি নিজেদের ভাগ বুঝে নিচ্ছেন পরিবহন শ্রমিক দল নেতা সেলিম ২শ, বিল্লাল ২শ সহ আরও অনেক নেতাই। আর এই জোয়ার আসর পরিচালনা করছেন সদস্য সচিবের অধীনস্থ শ্রমিক দল নেতা লিটন ও জামাই মনির।
এ বিষয় মহানগর শ্রমিক দলের আহবায়ক এস এম আসলাম বলেন, কমিটি আনার বিষয় ঢাকা আমি গিয়েছি আর সেখানে ফারুক কখনই যায়নি। সে কি করে বলবে কমিটি আনতে টাকা লেগেছে। আর আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে এই কমিটি দেয়া হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ টাকা নিলে তাদের পদ থাকবে। এটা সম্পুর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট কথা বলছে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন মহানগর শ্রমিক দলের নামে একটা গ্রুপ বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা এ্যাড. তৈমূর আলম খন্দকারকে নিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী পালন করেছে। যেটা দল বিরোধী কাজ। আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি বলেই আমার ধারণা তারা এই ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
আর সদস্য সচিব ফারুকের বিষয় যে সব তথ্য আপনাদের মাধ্যমে জানলাম সেটা তদন্ত করে দেখবো। যদি সত্যতা পাই তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এ বিষয় মহানগর শ্রমিকদলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন বলেন, আমার ব্যাপারে যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে সব মিথ্যা কথা। ইউনিয়ন কখনই বিক্রি করা যায় না তবে নির্বাচনের মাধ্যমে হাত বদল হয়। আর আমার ব্যাপারে যে মাসোয়ারার অভিযোগ উঠেছে সেটা সম্পুর্ন্য মিথ্যা যদি এই ধরনের কোন প্রমান কেউ দেখাতে পারে তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দিবো।
আর কমিটির বানিজ্যর বিষয় যে অভিযোগ উঠেছে সেটাও মিথ্যা। বরং আমরা যখন কমিটি দেই তারা শুধু নামগুলো লিখে দিয়ে যায়। আমরা আমাদের ব্যক্তিগত খরচে কম্পিউটারে টাইপ করে তাদের হাতে কমিটি তুলে দেই।
আর জুয়ার বোর্ডের বিষয় যদি বলি সেই জায়গাকে আমরা নিষিধ পল্লি হিসেবে ঘোষনা করেছি। শুধু তাই নয় যারা এই ব্যবসার সাথে জড়িত তাদেরকে বলা হয়েছে এখান থেকে সড়ে আসতে নতুবা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে, দুই পক্ষের পাল্টা পাল্টি অভিযোগর ফলে ধামাচাপায় পড়ে যাচ্ছে আসল রহস্য। “নারায়ণগঞ্জ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি: নং ২৫৮৪” এর বিষয় বেশ ঘটাকরে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে বহুবার। আর এনিয়ে শ্রমিক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা ও সমালোচনার কমতি নেই।
যার ধারাবাহিকতা চলতে থাকবে বহু দিন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের মত গুরুত্ব পুর্ন স্থানে কথিত পরিবহন শ্রমিক দলের নেতাদের নিয়ন্ত্রনে জোয়ার আসর পরিচালিত হওয়া আসলেই দু:খ জনক বিষয়। এখন দেখার বিষয় কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন ক্ষমতাশীন দলের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের নেতারা। আর যদি সেটাও না হয় তাহলে অভিযোগের আঙ্গুল তাদের দিকেও পরে। এব্যাপরে প্রশাসন বহুবার অভিযান পরিচালিত করেছেন কিন্তু শেষ বেলায় এর ফলা ফল আসে শুন্যের কোঠায়।