দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষনা করার পর থেকেই একের পর এক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রায় দুই বছর পুর্বে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হলেও সেই কমিটি এখন চার ভাগে বিভক্ত।
কমিটি ঘোষনার শুরুতেই আহবায়ক এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বকে বয়কট করেন স্থানীয় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা। এরপর থেকেই দলীয় কর্মসূচি থেকে শুরু করে সাংগঠনিক কর্মকান্ড চালিয়েছেন আলাদা ভাবে।
শুধু তাই নয় সাখাওয়াত টিপুর চেয়ে সাংগঠনিক ভাবে নিজেদের অবস্থান অনেকটাই শক্তিশালী করে তোলেন সিনিয়র নেতারা। কিন্তু বন্দর উপজেলা নির্বাচনে সংগঠনটির যুগ্ম-আহবায়ক আতাউর রহমান মুকুল দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তাকে বহিষ্কার করেন।
এরপর থেকে সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের একটি বিশাল অংশ কিছুটা নিরবতা পালন করেন। সেই নিরবতাই আহবায়ক এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর জন্য রাজনৈতিক কাল হয়ে দাড়ায়।
আতাউর রহমান মুকুল দল থেকে বহিষ্কার হওয়ার পরেও যুগ্ম-আহবায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টুকে নিয়ে দলের প্রয়োজনে মাঠে বিচরণ করেছেন বীরের বেশে।
এদিকে আতাউর রহমান মুকুল বহিষ্কার হওয়ায় দলের সাংগঠনিক নিয়মানুযায়ী তার পিছনে রাজপথে থাকতে নারাজ মহানগর বিএনপির সদস্য আওলাদ হোসেন, হাজী ফারুক হোসেন, আমিনুর ইসলাম মিঠু ও শহিদুল ইসলাম রিপন। তাই দলীয় কর্মসূচি গুলোতে তাদের বলয় নিয়ে আলাদা ভাবে রাজপথে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থানের জানান দেন।
অপরদিকে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সাংসদ প্রয়াত জালাল হাজী পরিবারের অন্যতম সদস্য ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক আবুল কাউছার আশাকে একাই নিজের বলয় নিয়ে আলাদা ভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে দেখা যাচ্ছে। তবে তার কর্মী বাহিনীর কাছে অনেকটাই ধরাশায়ী মহানগর বিএনপির আহবায়ক এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
কারন আবুল কাউছার আশা একাই নিজের বলয়ে যে কর্মী বাহিনী রেখেছেন। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, ছাত্রদল, কৃষক দলের নেতাকর্মী মিলিয়েও সাখাওয়াত ও টিপু আবুল কাউছার আশার কর্মী বাহিনীর সমান হতে পারেনি। জালাল হাজীর নাতি ও সাবেক সাংসদ এ্যাড. আবুল কালামের ছেলে হিসেবে নিজের যোগ্যতার পরিচয় ইতিমধ্যেই আবুল কাউছার আশা তার কর্মী বাহিনীর মিছিলের দীর্ঘতায় দিয়েছেন।
এদিকে, আতাউর রহমান মুকুলও কম যায় না, বহিষ্কার হওয়ার পরেও ভাতিজা আবুল কাউছার আশার মত কর্মী বাহিনী নিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সমাবেশে উপস্থিত হতে না পারলেও, রেখেছেন সাখাওয়াত টিপুর মত সম-বাহিনী।
এদিকে, মহানগর বিএনপির সদস্য আওলাদ হোসেন, হাজী ফারুক, আমিনুর ইসলাম মিঠু ও শহিদুল ইসলাম রিপনও কেন্দ্রীয় বিএনপির সমাবেশে চোখে পড়ার মত কর্মী বাহিনী নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। যা মহানগর বিএনপির দ্বায়িত্বে থাকা টিপু সাখাওয়াতের ঘাম ঝড়াতে যথেষ্ট।
অথচ চার ভাগে বিভক্ত মহানগর বিএনপি যদি ঐক্যবদ্ধ হতো তাহলে আর সবার কর্মী বাহিনী এক সাথে করে দলীয় সমাবেশে উপস্থিত হলে মিছিলের দীর্ঘতা কতটুকু হত তা কিছুটা হলেও অনুমান করা যেতে পারে।
তবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে প্রয়াত জালাল হাজী পরিবারের সদস্যরা যে কর্মী বান্ধব তার প্রমান দেখা গেছে বারংবার। এছাড়াও মহানগর বিএনপির গুরুত্বপূর্ন পদে প্রয়াত জালাল হাজী তার ছেলে সাবেক সাংসদ এ্যাড. আবুল কালাম ও তার ছেলে আবুল কাউছার আশা দ্বায়িত্ব পালনকালে অর্থ কেলেঙ্কারীর অভিযোগ না উঠলেও, সেটার ষোলকলা পূর্ণ করেছেন এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপু।