ধর্মের নাম ব্যবহার করে কেউ অরাজকতা করবেন,মসজিদ মন্দিরে ভাংচুর করবেন,ঈদগাহ হামলা করবেন,বিভিন্ন ক্লাবে হামলা করবেন এটা করতে দেওয়া হবে না সেই লক্ষ্যেই আমরা প্রতিটি মানুষকে সোচ্চার করছি।এখন প্রত্যেকের বাড়িতে খেয়াল করেন কারা কি করেন,কাদের পেশা কি,তাদের দায়িত্ব কি,তারা কি কাজটি করে।আমরা সব সময় আপনাদের পাশে আছি যেকোন সময়।
শনিবার(৫ অক্টোবর)দুপুরে শারদীয় দূর্গা পূজা -২০১৯ উপলক্ষ্যে নারায়নগঞ্জ জেলা পুলিশের আয়োজনে চাষাড়া শহীদ মিনারে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষদের মাঝে বস্ত্র বিতরনের সময় এই কথা বলেন নারায়নগঞ্জ পুলিশ সুপার।
শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষ্যে বস্ত্র বিতরনের সময় নারায়নগঞ্জ পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ বলেন,আমাদের কাজ হচ্ছে মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা করা এবং সকল ধর্মের মানুষের সমান পরিমান ধর্ম পালনে নিশ্চয়তা প্রদান করা।১৯৭১ সালের সংবিধানে মূল ছিলো সকল ধর্মের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে।
সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে।সনাতন ধর্মাবলম্বী সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজায় নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি পূজা মন্ডপে পুলিশ কাজ করছে।নারায়নগঞ্জ বাংলাদেশের একটি অন্যতম জেলা।এখানে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ বাস করে এবং বুরন্দী লোকনাথ ব্রক্ষাচারীর জন্মস্থান এবং লাঙ্গবন্দ সনাতন ধর্মের দুটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ন স্থান যেখানে প্রতি বছর লাখ লাখ লোক আসে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে।শারদীয় দূর্গা পূজায় নারায়নগঞ্জে প্রতিটি মন্ডপে পুলিশ সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে।
বাংলাদেশ একটি সাম্প্রতিক দেশ এই দেশে সব ধর্মাবলম্বীর মানুষ বাস করে।আপনারা দেখেছেন ৭১ আগে বাংলাদেশে পূজার অবস্থা কেমন ছিলো,৭১ এর পর কি হয়েছে,৭৫ এর পর কি ছিলো এবং ২০০৮ এর পর এখন কি অবস্থায় আছে।আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার বাবার উত্তরসূরি যে দেশটিতে ৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুমুজিবুর রহমানকে হত্যা করে ইসলামের নাম ভর করে কিছু মানুষ ধর্মের মধ্যে ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের ক্ষতি করেছিলো।ধর্ম বর্নের নামে সনাতন ধর্মের মানুষের উপর নির্যাতন করেছিলো কিন্তু ওই পরিস্থিতি লাঘব হয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধান অনু্যায়ী প্রতিটি ধর্মের মানুষকে সম্মান করার লক্ষ্যেই বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে।শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন হয়েছে সাথে সাধারন মানুষেরও।প্রতন্ত অঞ্চলেও এখন বিদ্যুৎ চলে গেছে।নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুরে হাজার হাজার গার্মেন্টস স্থাপিত হয়েছে এর ফলে বেকারত্ব অনেক লাঘব হচ্ছে।
৭১ সময় আমাদের স্বপ্ন ছিলো সোনার বাংলার আমাদের বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছি দেশের মানুষকে স্বাবলম্বী হবে কলকারখানায় কাজ করবে তারাও মালিক হবে তার জন্য।আপনারা দেখেছেন ৭১ এর আগে পাকিস্তানীরা সমস্ত শিল্প কারখানা পরিচালনা করতো আর আমরা কামলা ছিলাম।আজকে বাংলাদেশে কোন গরীব মানুষ নেই।মানুষের মধ্যে দারিদ্রতা কমে গেছে এখন মানুষ তিন বেলা পেট ভরে খাবার খায়।আগে ১শ টাকায় কাজের লোক পাওয়া যেতো কিন্তু এখন ১হাজার টাকা দিলেও পাবেন না বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে।
তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষদের উদ্দেশ্য করে আরো বলেন,মা দূর্গা এসেছে তার প্রতি কোন অসম্মান যাতে করা না হয়।মা দূর্গা আসেন অশুরকে শেষ করার মাধ্যমে সকল অশুভ শক্তি বিনাশ করতে।মার পূজো মন্ডপে কেউ যাতে মদ্যপান করে না ডুকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।পুলিশকে বলবো আপনারা সব সময় প্রতিটি মানুষের সাথে এবং স্থানীয় বর্গের সাথে কথা বলেন।
পূজা মন্ডপে কোন সমস্যা হলে আপনারা সরাসরি ঢাকা না জানিয়ে আমাদের জানান আমরা চেষ্টা করবো সমস্যার সমাধান করার। সমস্যা আমাদের আমরাই এর সমাধান করবো।আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো ফতুল্লা,নারায়নগঞ্জ সদর ও বন্দর সহ নারায়নগঞ্জের প্রতিটি পূজা মন্ডপে যাবার।আপনাদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি থানায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং ২৪ ঘন্টাই আপনারা যেকোন সমস্যায় পুলিশের কাছে সেবা পাবেন তার জন্য নারায়নগঞ্জ সদর মডেল থানার পাশে একটি কন্ট্রোল রুম খুলা হয়েছে যেখানে ২৪ ঘন্টা পুলিশ ডিউটিতে থাকবে।
তিনি নারায়নগঞ্জবাসীকে উদ্দেশ্য করে বলেন,আমরা নারায়নগঞ্জ কতটুকু করতে পেরেছি আমি তা জানি না কিন্তু আপনারা আমাদের অফুরন্ত ভালোবাসেন বুঝতে পারি।আপনাদের ভয় পাবার দরকার নেই।আপনে যদি মনে করেন আপনার জমি,পূজার জায়গা,বাড়ী কেউ দখল করে নিয়েছে,আপনার পাশের বাসায় কেউ মাদক ব্যবসা করে তাহলে বিনাদ্বিধায় থানা বা আমার অফিসে এসে আমার অতিরিক্ত যে পুলিশ সুপার আছে তাদের বলেন আপনার সমস্যা সমাধান করবো।কারন আমাদের সাথে স্থানীয় এমপিদের সাথে সুক্ষতা আছে।আপনারা এতদিনে যে গোপনে কান্না করেছেন সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমরা আপনাদের নির্ভয়টুকু দিচ্ছি।আপনাদের ভয় পাবার দিন শেষ।
শারদীয় দূর্গা পূজা -২০১৯ উপলক্ষ্যে নারায়নগঞ্জ সদর,ফতুল্লা,বন্দর,সিদ্দ্বিরগঞ্জ,সোনারগাঁ, রুপগঞ্জ,আড়াইহাজার এর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে বস্ত্র বিতরন করেন।
বস্ত্র বিতরনের সময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন) মোঃমনিরুল ইসলাম,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ)আব্দুল্লাহ আল মামুন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ডিএসবি)নূরে আলম,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(গোয়েন্দা)সুবাস সাহা,জেলা বিশেষ শাখার পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইও-২)মোঃসাজ্জাদ রোমান,নারায়নগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মোঃআসাদুজ্জামান,বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ(ওসি) রফিকুল ইসলাম,সিদ্দ্বিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ(ওসি)কামরুল ফারুক,
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ(ওসি)নজরুল ইসলাম,ফতুল্লা থানার পরিদর্শক(তদন্ত)মোঃহাসানুজ্জামান,ফতুল্লা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, রুপগঞ্জে থানার পরিদর্শক (তদন্ত)এমদাদ হোসেন, সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আলমগীর হোসেন,নারায়নগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি আব্দুস সালাম,সাধারন সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, নারায়নগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার সাহা,সাধারন সম্পাদক শিখন সরকার শিপন,নারায়নগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অরুন দাস প্রমূখ।