দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ প্রগতিশীল ৫ টি গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে শ্রমিক ছাঁটাই-নির্যাতন বন্ধ করা, মিথ্যা মামলা ও লে-অফ প্রত্যাহারসহ বন্ধ কারখানা খুলে দিয়ে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১-১২ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন- করোনা বিপর্যয়ের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বকেয়া রেখে মালিকরা ছাঁটাই-বরখাস্ত জোরপূর্বক ইস্তফা নিয়ে শ্রমিকদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কারখানা লে-অফ ও বন্ধ ঘোষণা করে শ্রমিকদের ক্ষুব্ধ বিক্ষুব্ধ করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। মালিকরা পরিকল্পিত ভাবে শিল্পে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশী হয়রানি চালিয়েছে। শ্রমিক ছাঁটাইয়ের নীল নকশা বাস্তবায়ন করে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ মালিকদের এই আচরণের প্রতিবাদ ও নিন্দা প্রকাশ করে বলেন করোনা সংকটের শুরুতে মালিকরা পোশাক রপ্তানিত আদেশ স্থগিত ও বাতিলসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে শ্রমিকের মজুরি পরিশোধের কথা বলে সরকারের কাছ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়েছে। তা সত্ত্বেও মালিকরা অনেক কারখানায় বেতন ভাতা না দিয়ে অব্যাহতভাবে শ্রমিক ছাঁটাই, কারখানা লে-অফ ও বন্ধ করে দিয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।
তার মধ্যে বিজিএমইএ সভাপতি প্রকাশ্যে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়ে সারাদেশে শ্রমিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। মালিকদের এসব অন্যায়ের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তারা বলেন জাতীয় বাজেটে বড় ধরণের সুবিধা আদায়ের কৌশল হিসেবে মালিকরা শ্রমিকদেরকে জিম্মিদশায় ফেলে ঘর পোড়ায় আলু পোড়া খেতে চায়। এই দুঃসময়ে শ্রমিক স্বার্থবিরোধী এসব অমানবিক প্রবণতা পরিহার করতে হবে। অন্যথায় কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে এর দায়দায়িত্ব তাদেরকেই নিতে হবে।
তারা আরও বলেন পোশাক কারখানা গুলোতে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া ছাড়াই শ্রমিকদের কাজ করানো হচ্ছে। যার ফলে দিনেদিনে শ্রমিকরা ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা আজ সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পতিত হয়েছে। তাদের জীবন রক্ষায় কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং আক্রান্তদের চিকিৎসা, চাকুরি ও কর্মের নিশ্চয়তা দিতে হবে। শ্রমিক ছাঁটাই, লে-অফ এর ঘোষণা বাতিল করে বন্ধ কারখানা খুলে দিয়ে শ্রমিকদের সকল বকেয়া পাওনা পরিশোধ ও মামলা হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নাঃগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি এম এ শাহীন বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলা কমিটির সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরিফ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি জেলার সভাপতি অঞ্জন দাস, সাধারণ সম্পাদক খাইসার হামিদ, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন জেলা কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক এইচ রবিউল চৌধুরী, বাংলাদেশ বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি জেলার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র জেলা কমিটির নেতা আবুল হাসেম সরকার প্রমূখ।