দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: আসন্ন নারায়ানগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ১৮ নং ওয়ার্ডের ভবিষ্যৎ কাউন্সিলর মাদক সম্রাট ও অপরাধীদের শেল্টারদাতা বিতর্কিত কাউন্সিলর প্রার্থী কামরুল হাসান মুন্নার হাতে যাচ্ছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহান নাসিক ১৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।কারন নাসিক নির্বাচনী প্রচারণায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটু ও মেহেদী হত্যা মামলার প্রধান আসামী রানাকে সাথে নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে কাউন্সিলর প্রার্থী কামরুল হাসান মুন্না বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
নিজের প্রচারণা করার লক্ষ্যে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটু ও খুনী রানাকে নিয়ে নাসিক ১৮নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় ঘুরে ভোটারদের কাছে থেকে চাচ্ছে ভোট এবং জানাচ্ছি সালাম।আর তার সহকারী হিসেবে কাজ করছে শীর্ষ অপরাধীরা।এছাড়াও ১৮নং ওয়ার্ডের একটি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা করতে গিয়ে দেখা যায় বিতর্কিত কাউন্সিলর প্রার্থী কামরুল হাসান মুন্না ও এমপি শামীম ওসমানের বিয়াই ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ লাভলু কে রিকশা টেনে নিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটু।এতে অনেকটা ভীত প্রকাশ করছে ভোটাররা দাবী করছে একটি সূত্র।
সূত্র মতে জানা যায়,আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ানগঞ্জ জেলায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারায়ানগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন।ইতিমধ্যে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন ভাগিয়ে এনেছেন বর্তমান মেয়র ডা.সেলিনা হায়াত আইভী।এর আগে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে নাসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষন করা হয়েছে।কিন্তু তফসিল ঘোষনার আগে থেকেই নাসিক নির্বাচনের কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা ও উঠান বৈঠকে ব্যস্ত সময় করছে পাড়।নাসিকের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বইছে নির্বাচনী আমেজ।প্রত্যেক ওয়ার্ডে একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছে।কাউন্সিলর হবার জন্য করছে তপৎসা।তবে নাসিক ১৮ নং ওয়ার্ডে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র।
সূত্র আরো জানায়,বর্তমান কাউন্সিলর মোঃকবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে চলছে দৌঁড়ঝাপ বেশি।একে অপরের বিরুদ্ধে করে চলছে বিদ্বাচারন।তবে এলাকায় এলাকায় গিয়েও চাচ্ছে উভয়ই ভোট ভোটারদের কাছে।সাবেক কাউন্সিলর মুন্না ইতিমধ্যে তার দলে ভীড়িয়েছে জেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটু ও মেহেদী হত্যা মামলার প্রধান আসামী রানাকে।আরো আছেন নারায়ানগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের বিয়াই ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ লাভলু।তবে ইতিমধ্যে মুন্নাকে নারায়ানগঞ্জ ৫ আসনের সাংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে।সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটুর বিরুদ্ধে নারায়ানগঞ্জ থানায় রয়েছে অর্ধশতাধিক মাদক সহ বিভিন্ন চাঁদাবাজি মামলা।অন্যদিকে রানা হচ্ছে মেহেদী হত্যা মামলার প্রধান আসামী।বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিটু ও রানাকে সাথে নিয়ে চাচ্ছে ভোট কাউন্সিলর প্রার্থী মুন্না।
১৮নং ওয়ার্ডের কিছু ভোটার জানায়,গত কয়েকদিন আগেও মুন্না বিটু ও রানাকে নিয়ে এক বিয়ে বাড়িতে ভোট চাইতে এসেছিলো।পরে বর ও কনে উভয়কে দোয়া করে নিজের ভোটেরও করেছে প্রচারণা।বিয়ে বাড়িকেও ছাড় দেয়নি মুন্না।আর সাথে করে নারায়ানগঞ্জ জেলার শীর্ষ মাদকব্যবসায়ী বিটু ও খুনী রানাকে নিয়ে যাচ্ছে ১৮ নং ওয়ার্ডে ভোটারদের মাঝে ভয় ও ভীত সৃষ্টি করার লক্ষ্যে।আর তা না হলে একজন মাদকব্যবসায়ী ও খুনীকে সাথে করে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করতো না কামরুল হাসান মুন্না।ভবিষ্যৎ যদি ১৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুন্না হয় তাহলে ১৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এলাকায় শান্তিতে থাকতে পারবে কিনা সন্দেহ।কারন মুন্না যে একজন মাদক সম্রাট ও খুনীদের শেল্টারদাতা তা ইতিমধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছে তার নির্বাচনী প্রচারণা দিয়ে।আর ক্ষমতার দাপট দেখাতে দলে ভীড়েছে এমপি শামীম ওসমানের বিয়াই সহ আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অপরাধীদের।তাই বলা যায় যদি আগামী দিনে কাউন্সিলর মুন্না হয় তাহলে এই ওয়ার্ড হয়ে উঠবে শ্রেষ্ঠ মাদক ব্যবসায়ী ও অপরাধের আশ্রয়স্থল।
নারায়ানগঞ্জ সদর থানার সোর্সের মাধ্যমে জানা যায়,গত ১ বছরে নারায়ানগঞ্জ শহরের তামাকপট্টির আবিদ আলী চৌধুরী ওরফে হাবলু চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটুকে মাদক মামলায় ২ বার গ্রেফতার করা হয়।কিন্তু নারায়ানগঞ্জের ৪ আসনের সাংসদের বিয়াই ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ লাভলু প্রতিবার থানা থেকে ছুটিয়ে নিয়ে আসেন বিটুকে।এর আগেও একাধিকবার তাকে থানা থেকে ছুটিয়ে আনেন তিনি।তার ছেলে ভিকির শেল্টারে বিটু যৌথভাবে নিতাইগঞ্জ মাদকের সয়লাব করে চলছে।পুলিশ বারবার বিটুকে গ্রেফতার করলেও তাকে সরকার দলীয় ক্ষমতার দাপটে ছুটিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যেকারনে পুলিশও হয়ে পড়েছে অসহায়।
অন্যদিকে গত ৩ ডিসেম্বর নারায়ানগঞ্জ সদর মডেল থানার ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃকবির হোসেনও নারায়ানগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছ থেকে সালাউদ্দিন বিটুর থেকে ১৮ নং ওয়ার্ডবাসী মাদক থেকে নিস্তার চাচ্ছে উল্লেখ করে বলেন,আমাদের এলাকা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা।আমার ১৮ নং ওয়ার্ডের সীমানা যেখানে শেষ সেখানে গোগনগর ইউনিয়নের শুরু আবার আমার যেখান থেকে শুরু সেখানে গোগনগর ইউনিয়নের সীমানা শেষ।আর এই এলাকাই হচ্ছে মাদকের সয়লাব।আর এই দুই এলাকায় তার মাদকের সয়লাব সে হচ্ছে সালাউদ্দিন বিটু।অনেক সময় গ্রেফতার হয়েছে।এখন আছে বিভিন্ন প্রার্থীর সাথে আতাত করছে।সামনে নির্বাচন সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে।আপনার কাছে এখন অনুরোধ থাকবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার জন্য।
উল্লেখ্য যে,নারায়ণগঞ্জ শহরের তামাকপট্টি এলাকার আবিদ আলী চৌধুরী ওরফে হাবলু চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটু ওরফে সালাউদ্দিন বিটু।২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ৫০০ পিস ইয়াবাসহ শহরের নিতাইগঞ্জ তামাকপট্টি এলাকার শুক্কুর মিয়ার রিকশার গ্যারেজ থেকে ডিবির হাতে গ্রেফতার হয় বিটু। একই বছরের ১৯ আগস্ট বিটুকে সাড়ে ৩০০ পিস ইয়াবাসহ তামাকপট্টি থেকে গ্রেফতার করে ডিবি। বিটু এর আগেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কদমতলী থানায় সাড়ে ৫০০ পিস ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হয়।গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি সালাউদ্দিন বিটুর সেকেন্ড ইন কমান্ড বুইট্টা সুজন, শাহীন ও আরিফকে ৬০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করে সদর মডেল থানা পুলিশ। এরপর গা-ঢাকা দেয় মাদক বিক্রেতা সালাউদ্দিন বিটু। পরবর্তীতে তিনি আবারো এলাকাতে ফিরে আসে।