দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পারিবারিক কলহের জের ধরে বাবা-মায়ের সাথে অভিমান করে নিজের শরীরে অকটেন ঢেলে নিজেই আগুন ধরিয়ে দিয়ে আতœহত্যা করার খবর পাওয়া গেছে শান্ত (২৫) নামের এক যুবক।
রবিবার দুপুর দেড়’টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই তথ্য নিশ্চিত করে নিহতের মামা মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া হোসেন্দী এলাকার মোঃ হযরত আলী জানান, আমার ভাগিনার শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
জানা যায়, ৮ অক্টোবর শনিবার বিকেল তিনটার দিকে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ঝাউচর গ্রামের নিজ বাসায় বাবা-মার সাথে অভিমান করে নিজের শরীরে অকটেন দিয়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে শান্ত। এসময় শান্তর মা সুফিয়া বেগম তাকে বাঁচাতে গিয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে তিনিও অগ্নিদ্বগ্ধ হোন।
গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় শান্ত ও তার মাকে উদ্ধার করে নিহত যুবকের বাবা মোহাম্মদ আলী মিয়া শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন। সেখানেই চিকিৎসাধিন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহতের মা আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধিন আছেন।
নিহত যুবকের বাবা মোঃ আলি মিয়া জানান, আমার ছেলে প্রায়ই মাদক সেবন করে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। গতকাল বিকেলে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর বাকবিতন্ডা দেখে আমাদের অজান্তে শরীরে তার বাইকের জন্য আনা অকটেন নিজের শরীরে ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
নিহত যুবকের চাচাতো বোন রাবেয়া জানান, শান্ত একজন মাদকাসক্ত। সে প্রতিনিয়ত মাদক সেবন করে বাড়ি ফিরতো। এর আগেও সে রান্না ঘরে নিজ শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গতকাল শনিবার বিকেলে শান্ত’র বাবা মার সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে অভিমান করে তার বাইকের জন্য আনা অকটেন দিয়ে নিজ শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। অই সময় তার মা বাঁচাতে গিয়ে তিনিও দ্বগ্ধ হয়। সাথে সাথেই ছেলের বাবা মোঃ আলী মিয়া তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এলাকাবাসী জানায়, আলি মিয়ার ছেলে শান্ত দীর্ঘ দিন যাবত মাদকসেবন করে আসছে। প্রায়ই সে মাদক সেবন করে অনেক উল্টাপাল্টা কাজ করতো এবং অনেকবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে। গতকাল বিকেলে তার মা-বাবার পারিবারিক দ্বন্ধ দেখে সে অভিমান করে নিজের শরীরে আগুন দিলে তার মা ও আশে পাশের
আত্মীয়স্বজনদের চিৎকারে ছুটে গেলে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মোঃ সেলিম রেজা জানান, শান্ত বরাবরই নেশার সাথে যুক্ত ছিলো। অনেকবার এটা নিয়ে বিচার সালিস হলেও সে কাউকে কর্ণপাত করেনি। সে নিজেই নিজের শরীরে অকটেন ঢেলে আতœহত্যা করেছে বলে আমাকে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী।
সোনারগাঁ থানার ওসি তদন্ত আহসান উল্লাহ জানান, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।