দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: ফতুল্লায় গৃহবধূ ফাতেমা আক্তার (৩১) কে আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। মামলায় নিহতের স্বামী,দেবর ও শ্বশুরসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাতে নিহতের মা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
আসামিরা হলেন- মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার গুসাইরচর গ্রামের আলী আহাম্মদের ছেলে আরিফ হোসেন (৩৬), তার ছোট ভাই বদিউজ্জামান (৩৫) ও তার বাবা আলী আহম্মদ (৬০)। তারা সকলে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা লালপুর চৌধুরী বাড়ী এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করে।
মামলার এজাহারে নাসিমা বেগম উল্লেখ করেন, আমার বড় মেয়ে মোসা. ফাতেমা আক্তার (৩১) বিগত ১৪ বছর পূর্বে আরিফ হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তান মো. ফাহাদ (১৩) এবং একটি কন্যা সন্তান মোসা. হুমায়রা (৬) রয়েছে। বিয়ের পর থেকে আরিফ হোসেনের সাথে আমার মেয়ের পারিবারিক কলহ চলছিল। তারপরও সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমার মেয়ে সংসার কোন রকমে টিকে ছিল।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত ২৬ মার্চ আমার মেয়ের শ্বশুর ফোনে করে আমাদের জানায়, গত ৯ মার্চ ফাতেমা আগুনে দগ্ধ হয়ে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ মার্চ বিকেলে সে মারা যান। পরে হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের লাশ শনাক্ত করি।
এ সময় ফাতেমার শরীরের বিভিন্ন অংশ আগুনে পুড়ানো ও ঝলসানো ক্ষত দেখতে পাই। ময়না তদন্ত শেষে মেয়ের মৃতদেহ দাফন করা হয়। তবে মেয়ের মৃত্যু ও আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার কারণ খুজতে গিয়ে পাই যে, গত ৯ মার্চ রাত ৩ টার সময়ে আমার মেয়ে ফাতেমা শবে বরাতের রোজা রাখার উদ্দেশ্যে রান্না ঘরে তরকারী গরম করতে যায়।
ওই সময় পারিবারিক কলহের জের ধরে তার স্বামী আরিফ হোসেন সহ অন্য আসামিরা মিলে পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তার চিৎকার শুনে আশেপাশের ভাড়াটিয়ারা এগিয়ে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায়।
পরে তাকে উদ্ধার করে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আমাদের কিছু জানায়নি এবং গোপনে ওই হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিল।
পরবর্তীকে আমার মেয়ে সেখানে মারা গেলে বিনা ময়নাতদন্তে লাশ নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। উক্ত আসামি সহ আরও অজ্ঞাত ২-৩ জন বিবাদী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়ের শরীরে আগুন লাগিয়ে তাকে হত্যা করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন বলেন, এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে।